ঢাকা, ৭ মার্চ (কুইকপোস্ট নিউজ) – ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের দিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। এই দিনটি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় গৌরবের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু ২০২৪ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এই উদযাপনের চেহারা পুরোপুরি বদলে গেছে।

২০২৪: জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন
২০২৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার এই দিনটি জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধান অনুষ্ঠানে হাজারো মানুষ সমবেত হয়। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সারাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী ও শিক্ষামূলক সেশন আয়োজিত হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে, যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়।

২০২৪-এ রাজনৈতিক পরিবর্তন
২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। তিনি ভারতে পালিয়ে যান, এবং নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। অক্টোবরে এই সরকার ৭ মার্চের মতো কিছু জাতীয় দিবসের সরকারি পালন বন্ধ করে দেয়, যা আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মায়।

২০২৫: নীরবতার ছায়া
২০২৫ সালের ৭ মার্চ সরকারি কোনো আয়োজন ছাড়াই চুপচাপ কেটে গেছে। সরকারি ছুটি বাতিল হওয়ায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কোনো সমাবেশ হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ব্যক্তিগতভাবে ও সামাজিক মাধ্যমে দিনটি স্মরণ করেছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে কিছু স্বাধীন পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও, মূলধারার গণমাধ্যমে এটি উল্লেখযোগ্যভাবে অনুপস্থিত।

জনগণের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। বেশিরভাগ মানুষ সরকারি নির্দেশ মেনে চললেও, কেউ কেউ এই পরিবর্তনকে জাতীয় ইতিহাসের প্রতি অবহেলা হিসেবে দেখছেন। এই নীরবতা কি স্থায়ী হবে, নাকি ভবিষ্যতে আবার উৎসবে ফিরবে—সেটাই এখন প্রশ্ন।