কুইকপোস্ট নিউজ | ১৮ মার্চ ২০২৫ | ওয়াশিংটন, ডি.সি.

ওয়াশিংটন—ফ্রান্স, আমেরিকার প্রাচীনতম মিত্র, এবার বড় দাবি তুলেছে। দেশটির রাজনীতিবিদরা বলছেন, ১৩৯ বছর আগে উপহার দেওয়া স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত দিক আমেরিকা। ফরাসি এমইপি রাফায়েল গ্লুকসম্যানের নেতৃত্বে এই দাবি উঠতেই হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট তীব্র জবাব দিয়েছেন—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার ভূমিকার কথা মনে করিয়ে। এটা কি কূটনৈতিক ঝগড়া, নাকি রাজনৈতিক নাটক? বিশ্বজুড়ে আলোচনা তুঙ্গে।

রোববার প্যারিসে প্লেস পাবলিক কনভেনশনে গ্লুকসম্যান, একজন সমাজতান্ত্রিক নেতা, আমেরিকাকে আক্রমণ করেন। “স্ট্যাচু অফ লিবার্টি আমাদের ফেরত দিন,” তিনি বলেন, এজেন্স ফ্রান্স-প্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী। “আমরা এটি উপহার দিয়েছিলাম, কিন্তু আপনারা এর মূল্য বোঝেন না।” তিনি ট্রাম্পের নীতি—চাকরি কমানো, রাশিয়ার পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা—তুলে ধরে বলেন, আমেরিকা মূর্তির প্রতীক স্বাধীনতা ভুলে গেছে। এক্স-এ “স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফ্রান্স দাবি” ট্রেন্ডিং—কেউ হাসছে, কেউ রেগে যাচ্ছে।

সোমবার হোয়াইট হাউসে ফক্স নিউজের পিটার ডুসি প্রশ্ন করেন—ট্রাম্প কি মূর্তি ফেরত দেবেন? ২৭ বছরের লিভিট জবাবে বলেন, “কখনোই না।” তারপর ঝড় তুলে দেন: “আমি ফ্রান্সকে মনে করিয়ে দিতে চাই, শুধু আমেরিকার জন্যই আজ ফরাসিরা জার্মান ভাষায় কথা বলছে না। তাই তাদের আমাদের মহান দেশের কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।” ১৯৪৪-এ নরম্যান্ডিতে আমেরিকার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তার এই বক্তব্য এক্স-এ ৫০ হাজারের বেশি লাইক পেয়েছে। “ক্যারোলিন লিভিট জবাব” সার্চ বাড়ছে—ভিডিও ভাইরাল।

১৮৮৬ সালে ফরাসি শিল্পী ফ্রেডেরিক-অগাস্ট বার্থল্ডির তৈরি এই মূর্তি আমেরিকার স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে উপহার দেওয়া হয়। নিউইয়র্ক হারবারে দাঁড়িয়ে এটি গণতন্ত্রের আলো ছড়ায়। গ্লুকসম্যানের দাবি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের সঙ্গে জড়িত—ইউক্রেন নীতি, বাজেট কাটছাঁটে ইউরোপ রেগে। “তোমরা গবেষকদের চাকরি কাটলে আমরা তাদের নেব,” তিনি যোগ করেন। এক্স-এ কানাডা ও অন্য দেশেরও ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে—এটা কি সত্যি ফেরত চাওয়া, নাকি প্রতীকী আঘাত? ১৯৪৪-এ আমেরিকার সৈন্যরা নরম্যান্ডিতে নেমে ফ্রান্সকে নাৎসি দখল থেকে মুক্ত করে। ৪২৫,০০০ মিত্র সৈন্য মারা যায়, যার মধ্যে ৭৩,০০০ আমেরিকান। ফ্রান্সের কৃতজ্ঞতা থেকেই মূর্তির উৎপত্তি। এখন ট্রাম্পের “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতিতে সেই বন্ধন টানাপড়েনে। গ্লুকসম্যানের দল বলছে, “স্বৈরাচারীদের সঙ্গে হাত মেলানো দেশ স্বাধীনতার প্রতীক ধরে রাখতে পারে না।” লিভিটের পক্ষ? “অকৃতজ্ঞতা” বলে ক্ষোভ।

৯৩ মিটারের এই মূর্তি ফ্রান্সে পাঠানোর কোনো সম্ভাবনা নেই—আইনি মালিকানা আমেরিকার, ট্রাম্পের দল পিছপা হচ্ছে না। তবে এই ঝগড়া অনলাইনে আগুন জ্বালিয়েছে। এক্স-এ কেউ লিখেছেন, “ফ্রান্স নিক, আমাদের ছাত্র ঋণও নিয়ে যাক।” অন্যরা লিভিটের পক্ষে: “তিনি তথ্য দিয়ে ফ্রান্সকে ধুয়ে দিয়েছেন।” কুইকপোস্ট নিউজ এই উত্তেজনা নজরে রাখছে—আমেরিকা-ফ্রান্স সম্পর্কের পরবর্তী অধ্যায় দেখার অপেক্ষায়।


তথ্যসূত্র ও যাচাই:
  • সামাজিক মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া এক্স পোস্ট (১৭-১৮ মার্চ ২০২৫) থেকে—বাস্তব সময়ের গুঞ্জন, চূড়ান্ত নয়।
  • গ্লুকসম্যানের বক্তব্য এজেন্স ফ্রান্স-প্রেস (১৬ মার্চ ২০২৫) থেকে, ফ্রান্স ২৪ এ ক্রস-চেক—ব্রেকিং নিউজ হিসেবে গৃহীত, সব মাধ্যমে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
  • লিভিটের উক্তি হোয়াইট হাউস ব্রিফিং (১৭ মার্চ ২০২৫) থেকে, ফক্স নিউজ এবং মিডিয়াইট—সরাসরি প্রতিলিপি, যাচাইকৃত।
  • ইতিহাসের প্রেক্ষাপট (মূর্তির উপহার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ) পাবলিক রেকর্ড এবং ন্যাশনাল আর্কাইভস থেকে—তথ্যভিত্তিক ভিত্তি।