ঢাকা, ৬ মার্চ (কুইকপোস্ট নিউজ)
বাংলাদেশে নারীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড ক্রমেই বাড়ছে, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এটি থামাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী জড়িত থাকার পরও তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গতকাল রাতে শাহবাগ থানা ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালেও আসামি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, যা নারী নিরাপত্তার প্রতি উদাসীনতার প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনার পাশাপাশি, গত ফেব্রুয়ারিতে কক্সবাজারে একটি মেয়েদের ফুটবল টুর্নামেন্ট কট্টরপন্থীদের হুমকির মুখে বাতিল হয়। এছাড়া, সংখ্যালঘু নারীদের উপর হামলার খবরও বাড়ছে। গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে একটি হিন্দু মন্দিরে নারীদের সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে হামলাকারীরা নারীদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানাচ্ছে, গত বছর গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে নারী ও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ২০০টির বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু সরকারের তরফে কোনো তদন্ত বা শাস্তির উদ্যোগ নেই।
ঢাবি ঘটনায় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়হীনতা এবং আইনের দুর্বল প্রয়োগের কারণে নারী শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা রাস্তায় নামলে প্রতিবাদ হয়, কিন্তু ফলাফল শূন্য।” এদিকে, জাতিসংঘ গত অক্টোবরে বাংলাদেশে নারীদের উপর সহিংসতা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।
নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, সচেতনতা বৃদ্ধি ও কঠোর আইন প্রয়োগ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন ও সংস্কারে ব্যস্ত থাকলেও, নারীবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড রোধে তেমন কোনো পরিকল্পনা দেখা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সমাজে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা।